এবিএনএ : আমি মানসিকভাবে অসুস্থ, যা বলেছি সব মিথ্যে কথা। সব বানিয়ে বলেছি। আমাকে গ্রেপ্তার করবে, কে আসবে আসুক- আমি আমেরিকার সিটিজেন। কয়েকদিন ধরে দেওয়া বক্তব্যকে মিথ্যা দাবি করে পুরোপুরি সুর পাল্টে এভাবেই বললেন এবার সালমান শাহ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রুবি সুলতানা। গত সোমবার রুবি তার ফেসবুকে সালমান শাহ আত্মহত্যা নয়, হত্যা দাবি করে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে বলেন, আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন সালমান শাহ এবং তা করিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সামিরা হকের পরিবার।
বুধবার প্রকাশিত একটি ভিডিওতে রুবি তার আগের দাবি থেকে কিছুটা সরে এসে বলেন, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তিনি জানেন না। এটা ইনভেস্টিগেশন করলে বের হবে। কিন্তু তার পরের আরেকটি ভিডিওতে পুরোপুরি উল্টো বক্তব্য দিলেন রুবি। এবার তিনি আগের সমস্ত বক্তব্যকে মিথ্যা বলে দাবি করে বসলেন। উল্লেখ্য, সালমান হত্যা মামলার ১১ জন আসামির মধ্যে অন্যতম রুবির পুরো নাম রাবেয়া সুলতানা রুবি। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে চাইনিজ স্বামী ও দুই সন্তানসহ অনেক বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি।
ফেসবুক লাইভে এসে প্রকাশ করা নতুন ভিডিওতে রুবি বলেন, আমি মানসিকভাবে অসুস্থ, আমি যা কিছু বলেছি এটার কোনো মূল্য নাই। আমি প্রমাণ দিতে পারি যে- আমি মানসিকভাবে অসুস্থ। একা থাকি তো, এ জন্য কিছুটা মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। হাজবেন্ডের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম যা বলেছি এটা ঠিক না। যা কিছু হয়েছে তার জন্য সত্যিই আমি দুঃখিত। তিনি আরো বলেন, একাকী বসে বসে এসব ভাবতাম। যা বলেছি সব মিথ্যে কথা। যা কিছু বলেন কিছু যাই আসে না, কারণ আমি অসুস্থ। তোমরা গালিগালাজ দিলে কী হবে, আমারে তো পাবা না, আমি তো আমেরিকায় থাকি। আমি কিচ্ছু জানি না। এটা খুন হতে পারে, আত্মহত্যা হতে পারে।
ফেসবুক লাইভ থেকে রুবিকে খুনি বলে অভিযোগের জবাবে রুবি বলেন, আমি খুনি-প্রমাণ কর। কিভাবে করবা, আমি কিন্তু বাংলাদেশি না আমেরিকান সিটিজেন। আমাকে কোথা থেকে গ্রেপ্তার করবে, আসুক নাহ। কে আসবে এফবিআই আসবে। সামিরার ব্যাপারে যা বলেছি, তা মিথ্যা কথা- এগুলা মস্তিষ্কের কাহিনী। আমি সব বানিয়ে বলেছি।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় ভাড়া বাসায় পাওয়া যায় অভিনেতা সালমান শাহর লাশ। ওই ঘটনায় সালমানের বাবা কমর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। ২০০২ সালে মারা যান সালমান শাহর বাবা। লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে থাকা রুবির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ করে আসছিলেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী।
পুত্রবধূ সামিরা হক, সামিরার মা লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খল চরিত্রের অভিনেতা ও সালমানের বন্ধু আশরাফুল হক ওরফে ডন, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাই, রুবি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, সহকারী নৃত্যপরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, মোস্তাক ওয়াহিদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহকর্মী মনোয়ারাকে ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আদালতে আবেদন করেন নীলা চৌধুরী।